অপরাজেয় কন্ঠ ডেস্ক : জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপি,লক্ষ্মীপুরের উদ্যোগে গতকাল ১মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস -২০২৫ এর আলোচনা ও মত বিনিময় সভা বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালিত হয়।
বিকেল ৪টায় স্থানীয় রোজ গার্ডেন চাইনিজ রেস্টুরেন্টে অনেক মানুষের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানটি প্রাণবন্ত রূপ নেয়।অনুষ্ঠানটি এক পর্যায়ে গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের মিলনমেলায় পরিণত হয়।
এই দিনে বক্তারা বিভিন্নভাবে তাদের বক্তব্যে ১মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরেন। তাছাড়া শ্রমিকদের জন্য এই সংগঠন ও কর্মীদের কি করণীয় থাকতে পারে, সেই বিষয়ে সুচিন্তিত আলোকপাত করেন।
বক্তারা বলেন, আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস যা সচরাচর মে দিবস নামে অভিহিত। প্রতি বছর পয়লা মে তারিখে বিশ্বব্যাপী উদযাপিত হয়। এটি আন্তর্জাতিক শ্রমিক আন্দোলনের উদ্যাপন দিবস। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শ্রমজীবী মানুষ এবং শ্রমিক সংগঠনসমূহ রাজপথে সংগঠিতভাবে মিছিল ও শোভাযাত্রার মাধ্যমে দিবসটি পালন করে থাকে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় ৮০টি দেশে পয়লা মে জাতীয় ছুটির দিন। আরো অনেক দেশে এটি বেসরকারিভাবে পালিত হয়।
শ্রমিক দিবসের ইতিহাস সম্বন্ধে বক্তারা বলেন, ১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দে আমেরিকার শিকাগো শহরের হে মার্কেটের ম্যাসাকার শহিদদের আত্মত্যাগকে স্মরণ করে পালিত হয়। সেদিন দৈনিক আটঘণ্টার কাজের দাবিতে শ্রমিকরা হে মার্কেটে জমায়েত হয়েছিল। তাদেরকে ঘিরে থাকা পুলিশের প্রতি এক অজ্ঞাতনামার বোমা নিক্ষেপের পর পুলিশ শ্রমিকদের ওপর গুলিবর্ষণ শুরু করে। ফলে প্রায় ১০-১২ জন শ্রমিক ও পুলিশ নিহত হয়। ১৮৮৯ খ্রিস্টাব্দে ফরাসি বিপ্লবের শতবার্ষিকীতে প্যারিসে দ্বিতীয় আন্তর্জাতিকের প্রথম কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দে থেকে শিকাগো প্রতিবাদের বার্ষিকী আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন দেশে পালনের প্রস্তাব করেন রেমন্ড লাভিনে ১৮৯১ খ্রিস্টাব্দে আন্তর্জাতিকের দ্বিতীয় কংগ্রেসে এই প্রস্তাব আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত হয়। এর পরপরই ১৮৯৪ খ্রিস্টাব্দে মে দিবসের দাঙ্গার ঘটনা ঘটে। পরে, ১৯০৪ খ্রিস্টাব্দে আমস্টারডাম শহরে অনুষ্ঠিত সমাজতন্ত্রীদের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এই উপলক্ষ্যে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়। প্রস্তাবে দৈনিক আটঘণ্টা কাজের সময় নির্ধারণের দাবি আদায়ের জন্য এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য বিশ্বজুড়ে পয়লা মে তারিখে মিছিল ও শোভাযাত্রা আয়োজন করতে সকল সমাজবাদী গণতান্ত্রিক দল এবং শ্রমিক সংঘের (ট্রেড ইউনিয়ন) প্রতি আহ্বান জানানো হয়। সেই সম্মেলনে “শ্রমিকদের হতাহতের সম্ভাবনা না থাকলে বিশ্বজুড়ে সকল শ্রমিক সংগঠন মে মাসের ১ তারিখে ‘বাধ্যতামূলকভাবে কাজ না-করার’ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। অনেক দেশে শ্রমজীবী জনতা মে মাসের ১ তারিখকে সরকারি ছুটির দিন হিসেবে পালনের দাবি জানায় এবং অনেক দেশেই এটা কার্যকর হয়। দীর্ঘদিন ধরে গণতান্ত্রিক, সমাজতান্ত্রিক, কমিউনিস্ট, ছাড়াও আরো কিছু প্রভাবশালী সংগঠন তাদের দাবি জানানোর জন্য মে দিবসকে মুখ্য দিন হিসাবে বেছে নেয়। বিশ্বের অনেক দেশেই মে দিবস একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিন, এ উপলক্ষ্যে সামরিক কুচকাওয়াজের আয়োজনও করা হয়।
এছাড়া বক্তারা আরো বলেন, নারী শ্রমিক সহ সকল শ্রমিকদের ন্যায্যমজুর দিতে হবে।শ্রম ঘন্টার হিসাব রাখতে হবে। কোন শ্রমিককে বাড়তি সময়ে অন্যায় ভাবে কাজে লাগানো যাবে না।শ্রমিকের মজুরি হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) নির্দেশ মতে,শ্রমিকদের ঘাম শুকানোর আগে দিতে হবে।
প্রতিবন্ধীদের তাদের সাধ্যমত শ্রমের আওতায় আনতে হবে।প্রতিবন্ধীদের স্বাবলম্বী করতে হবে। উক্ত অনুষ্ঠানের উপস্থিত ছিলেন এবং বক্তব্য প্রদান করেন প্রতিনিধি আব্দুল হামিদ, জি এম জাকারিয়া খাঁন সায়েম,জাহাঙ্গীর আলম,রেজাউল করিম পারভেজ, অ্যাডভোকেট সোহেল, এডভোকেট আফতাব উদ্দিন, আরমান হোসেন ইউসুফ হাসান, মোবারক হোসেন, গোলামসারোয়ার সহ বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
Leave a Reply