লক্ষ্মীপুর রামগঞ্জ প্রতিনিধি:
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে ১ দিনে কাজ কাজ করেই শেষ দেখানো হয়েছে ৪০ দিনের অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি প্রকল্পের কাজ। দরবেশপুর ইউনিয়নের আলীপুর রেনেসা কিন্ডার গার্টেন স্কুল হইতে তাহের মাষ্টারের বাড়ী পর্যন্ত সড়কটি পুন: নির্মাণ করার কথা থাকলেও সড়কটিতে একদিনে ১০ জন শ্রমিক দিয়ে ১০ ফুটস্থানে সড়কের ঢালে মাটি বসিয়ে দেখানো হয়েছে ৪ লাখ ৪৮ হাজার টাকার ১১১২ ঘন মিটার পুন: নির্মাণ কাজ।
কাজে নারী শ্রমিকদের কথা থাকলেও কোন নারী শ্রমিক কাজে না লাগিয়ে পুরুষ শ্রমিক ১০ জন দিয়েই দেখানো হয়েছে কাজ। রাস্তার উপড়ে মাটি না ফেলে ঢালে ১০ ফুটস্থানে মাটির কাজ করায় কাজের কাজ কিছুই হয়নি অভিযোগ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা।
স্থানীয়দের অভিযোগ মেরামতের কাজে অনিয়মের অভিযোগ থাকলেও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিসকে ম্যানেজ করে প্রকল্প সভাপতি স্থানীয় ইউপি সদস্য শেখ রফিক মোটা অঙ্কের টাকা লোপাট করে পকেট ফুলিয়েছেন। ১০ জন শ্রমিক দিয়ে একদিনেই ৪০ দিনের কাজ শেষ। হয় নাই কাজের কাজ কিছুই ।রামগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির ২য় পর্যায়ের দরবেশপুর ইউনিয়নে আলীপুর রেনেসা কিন্ডার গার্টেন স্কুল হইতে তাহের মাষ্টারের বাড়ী পর্যন্ত প্রকল্পে ৫০ জন নারী-পুরুষ শ্রমিকের ৪০ দিন কাজ করার কথা। এ কাজে শ্রমিক প্রতি ৪০০ টাকা করে ৪ লাখ ৪৮ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। কাজটি শেষ হওয়ার কথা ১০ জুন। ১০ জুন একদিনেই কাজ শুরু হতেই ওইদিনই ১০ ফুট এক চাকা করে এক পাশের রাস্তার ঢালে মাটি দিয়ে দেখানো হয়েছে কাজ শেষ।
এ প্রকল্পে ১০ জন শ্রমিক দিয়ে ১ দিনে কাজ শেষ করে মোটা অঙ্কের টাকা আত্মসাৎ করার পাঁয়তারা করা হয়েছে। সরকার অতিদরিদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে শ্রমিক প্রতি গড়ে ৪০০ টাকা করে মজুরি নির্ধারণ করে। শ্রমিকদের ওই মজুরি মোবাইলে বিকাশ সিমের মাধ্যমে তাদের অ্যাকাউন্টে জমা হওয়ার কথা। অথচ সেই সিম ইউপি মেম্বার শ্রমিকদের না দিয়ে তার নিকট রেখে নিজেই ওই টাকা উত্তোলন করেছেন জানিয়েছেন শ্রমিকরা নিজেই।
ওই এলাকার দুলাল, হাছান,বাচ্চু, ইমতিয়াজ মামুন,টুটুলসহ আরো অনেকের সাথে কথা বলে জানা গেছে,দেশব্যাপী সরকারের অতিদরিদ্রদের কর্মসৃজন কর্মসূচি (ইজিপিপি) আওতায় লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে প্রকল্প শুরু হয়েছে। কিন্তু স্থানীয় সেই অতিদরিদ্ররাই থাকছেন কর্মসূচির বাইরে। এ প্রকল্পের সভাপতি স্থানীয় ইউপি সদস্য শেখ রফিক মিয়া। প্রকল্পে ৪৩ জন অতিদরিদ্র লোকের ৪০ দিন কাজ করার কথা ছিল। তারা প্রতিদিন জনপ্রতি চারশ’ টাকা করে এ টাকা পাবেন বলে প্রকল্পে বলা হয়েছিল। কাজের স্বচ্ছতার জন্য কাজের সাথে যুক্ত প্রত্যেকের টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে নিজ নিজ মোবাইল নাম্বারে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
কিন্তু ভুয়া উপকারভোগীর তালিকা বানিয়ে নিজের লোকদের নামে মোবাইল সিম তুলে অন্য লোকজন দিয়ে মাটি কেটে অতিদ্ররিদ্রদের টাকা হাতিয়ে নিতে চাইছেন প্রকল্প সভাপতি এমনটাই দাবি সাধারণ এলাকাবাসীদের।
এলাকবাসী আরও জানায়,’এই রাস্তায় মেরামতে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। মানুষের চলাচলের কথা চিন্তা করে এখানে মাটি কাটানো হয়নি। যেনতেনভাবে মাটি ফেলে কাজ শেষ করে মেরামত করা হয়েছে ও দায়মুক্তি নিয়ে চলে যাওয়া হচ্ছে। তারপর এ রাস্তায় কত টাকার মাটি কাটার কথা এসব জানার উপায় আমাদের নেই। কারণ কাজের পাশে কোনো সাইনবোর্ড নেই।
অনিয়মের বিষয়ে প্রকল্পের সভাপতি ও ইউপি সদস্য শেখ রফিক মিয়া বলেন,’গ্রামে অতিদরিদ্র লোক পাওয়া যায় না। ফলে মাটি কাটার দল এনে কাজ করাতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে দরবেশপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান জানান,এ বিষয়ে তিনি জানেন না। তবে অনিয়মের বিষয়টি দেখবেন বলেও জানান।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা দিলিপ বাবু বলেন,’এই প্রকল্পে অনিয়মের বিষয়ে শুনেছি। সঠিক নিয়মে কাজ না করলে বিল পাবে না। এর আগেও যারা এমনটা করেছে তাদের বিল দেওয়া হয়নি।গ্রামে কাজের জন্য অতিদরিদ্র লোক পাওয়া যায় না প্রকল্প সভাপতির এমন বক্তব্য মানতে নারাজ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছাঃ শারমিন ইসলাম। তিনি বলেন,অনিয়মের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ২৩/০৬/২০২৩
Leave a Reply